Thursday, February 28, 2013

বাংলা নতুন-বানান Bangla Natun-Banan-তৃতীয় অংশ




লেখাটি ‘অহনলিপি-বাংলা১৪’ AhanLipi-Bangla14 ফন্টে পড়লে লেখাটির উদ্দেশ্য স্পষ্ট হবে৤


অনধিকারীর এই চেষ্টায়  
চিন্তার অনেক খামতি অবশ্যই আছে৤




বাংলা নতুন-বানান  Bangla Natun-Banan

  তৃতীয় অংশ
(চারটি অংশ)
  



বাংলা ইউনিকোড ফন্ট "অহনলিপি-বাংলা১৪" বিনামূল্যে ডাউনলোড করুন ৤ লিংক:

https://sites.google.com/site/ahanlipi/font-download/AhanLipi-Bangla14.zip

কিংবা

https://sites.google.com/site/ahanlipi/
      
অথবা --

বাংলা নতুন-বানানরীতি প্রয়োগ করে লিখবার জন্য AALOY-FontGroup.zip থেকে অতিরিক্ত কিছু 
ইউনিকোড ফন্ট ডাউনলোড করুন:

https://sites.google.com/site/ahanlipi/home/bangla-natun-banan-font/AALOY-FontGroup2014.zip






বাংলা নতুন-বানান

বাংলা নতুন-বানান -৪৮

[তৃতীয় অংশ]



মনোজকুমার দ. গিরিশ৤
মণীশ পার্ক, কোলকাতা, ভারত












ব-২০৤ ইংরেজিতে একটি বাক্য আছে যেটির মধ্যে ইংরেজি সকল হরফ আছে:-- 

THE QUICK  BROWN FOX JUMPS OVER THE LAZY DOG. 
 
ইংরেজিতে ২৬টি হরফ, তাই এরকম বাক্য তৈরি করা সহজ, কিন্তু বাংলায় আছে ইংরেজির আড়াইগুণেরও বেশি(২.৬৫ গুণ) হরফ৤ সব মিলে ৬৯টি হরফ এবং চিহ্ন, স্বরবর্ণ--১১, ব্যঞ্জনবর্ণ--৪০, স্বরচিহ্ন--১০, ফলা--৮ (এই মোট ৬৯)৤ এর সবগুলি একটি বাক্যে ব্যবহার করে বাংলাভাষায় কোনও বাক্য নেই৤ কাজ চালাবার মতো একটি বাক্য তৈরি করা হল৤ 

        নিচের বাক্যটির মধ্যে বাংলা সকল স্বরবর্ণ,সকল ব্যঞ্জনবর্ণ, সকল স্বরচিহ্ন, সবকটি ফলা ইত্যাদি আছে:--

বিষণ্ণ ঔদাসীন্যে ঊষাবৌদি বাংলাভাষায় প্রচলিত 

ঈশপের নিখুঁত গল্পটির অর্ধেক বলতেই ঋতু 

ভুঁইঞা আর ঐন্দ্রিলা দারুণ হই-হই করে উঠল-- 

ওঃ, ব্যাস্ এবার থাম বুঝেছি বড্ড পুরান ঢঙের 

কেমন এক গল্প যার নীতি বাক্য হল-- 

“মূঢ় আড়ম্বর ও আত্মশ্লাঘার ফল জীবনে 

বিঘ্ন ও বৃহৎ ক্ষতি” -- তাই না? এ্যাঁ?  

 ০১২৩৪৫৬৭৮৯  ৳৫৬/-    ৉৫৬/- 


         বাংলাভাষা ও বানান সংস্কারের পরিপ্রক্ষিতে অন্তত ৬টি বিষয়ের দিকে নজর দিতে হবে--
(১)বর্ণমালা সংস্কার, (২)নতুন লিপি নির্মাণ, (৩)বর্ণমালার সজ্জা, (৪)লিখন-পদ্ধতির সংস্কার, (৫)যুক্তবর্ণ সংগঠন, (৬)লিপির গঠন৤

         ভাষা-সংস্কারের পরে, তথা-- 

১৤বর্ণমালার সংস্কার,

২৤নতুন লিপি নির্মাণ

৩৤বর্ণমালার সজ্জা

৪৤লিখন-পদ্ধতির সংস্কার

৫৤যুক্তবর্ণ সংগঠন

৬৤লিপির গঠন 


ইত্যাদি বিষয়ে সংস্কার সম্পন্ন হবার পরে) এই বাক্যটির চূড়ান্ত রূপ ক্রমে ক্রমে 
কেমন হবে তা নিচে দেখানো হল৤  
উদ্দিষ্ট বাক্যটি হল:__

বিষণ্ণ ঔদাসীন্যে ঊষাবৌদি বাংলাভাষায় 

প্রচলিত ঈশপের নিখুঁত গল্পটির অর্ধেক 

বলতেই ঋতু ভুঁইঞা আর ঐন্দ্রিলা দারুণ 

হই-হই করে উঠল-- ওঃ, ব্যাস্ এবার থাম 

বুঝেছি বড্ড পুরান ঢঙের কেমন এক গল্প 

যার নীতি বাক্য হল-- “মূঢ় আড়ম্বর ও 

আত্মশ্লাঘার ফল জীবনে বিঘ্ন ও বৃহৎ 

ক্ষতি” -- তাই না? এ্যাঁ?   

০১২৩৪৫৬৭৮৯  ৳৫৬/-    ৉৫৬/- 


      


বাংলা নতুন-বানান -৪৯

      
         দেখা যাক নতুন বানানে কেমন হবে:--




বীশন্ন ওউদাশীন্ন৙ উশা বৗউদী বাংলা ভাশায়
বিষণ্ণ  ঔদাসীন্যে  ঊষা বৌদি  বাংলা ভাষায় 

প্‍রচলীত ইশপ৙র নীখুঁৎ গল্পটীর অ৒ধ৙ক
প্রচলিত ঈশপের নিখুঁত গল্পটির অর্ধেক


বৗলত৙ই ৒রীতু ভুঁইয়াঁ আর ওইন্দ্‍রীলা দারুন
বলতেই ঋতু  ভুঁইঞা আর  ঐন্দ্রিলা  দারুণ


হৗই-হৗই কৗর৙ উঠলৗ-- ওঃ, ব৙঄স্ এবার থামৗ
হই-হই করে  উঠল--  ওঃ, ব্যাস্ এবার থাম 

বুঝ৙ছী বড্ডৗ পুরানৗ ঢঙ৙র ক৙঄মন এাক গল্প
বুঝেছি বড্ড পুরান  ঢঙের কেমন এক গল্প

জার নীতী-বাক্ক৚ হৗলৗ-- মুঢ়৹ আড়ম্বর ও
যার  নীতি বাক্য হল--  মূঢ়  আড়ম্বর 

আত্তশ্লাঘার ফল জীবন৙ বীঘ্ন ও ব্‍রীহৎ
আত্মশ্লাঘার ফল জীবনে বিঘ্ন  বৃহৎ 

খতী”-- তাই না, এ৙঄৺?   
ক্ষতি”-- তাই না? এ্যাঁ? 

 ০১২৩৪৫৬৭৮৯    ৳৫৬/-     ৉৫৬/-
 ০১২৩৪৫৬৭৮৯     ৳৫৬/-    ৉৫৬/-






(বাক্যটি পরে আরও কিছুটা পরিমার্জন করা হয়েছে)


বিষণ্ণ ঔদাসীন্যে ঊষা বৌদি বাংলাভাষায়
বীশন্ন ওউদাশীন্ন৙ উশা ব৚উদী বাংলাভাশায়

প্রচলিত ঈশপের নিখুঁত গল্পটির ডালপালা
প্‍রচলীত ইশপ৙র নীখুঁত গল্পটীর ডালপালা

অর্ধেক ছড়াতেই ঋতু ভুঁইঞা আর ঐন্দ্রিলা  
অ৒ধ৙ক ছড়াত৙ই ৒রীতু ভুঁইয়াঁ আর ওইন্দ্‍রীলা


ধড়ফড়িয়ে দারুণ হৈ-হৈ করে ঊঠল--ওঃ, 
ধড়ফড়ীয়৙ দারুন হ৚ই-হ৚ই ক৚র৙ উঠল৚--ওঃ,


ব্যাস্‌ এবার থাম বুঝেছি বড্ড পুরান
ব৙঄স্‌ এবার থাম৚ বুঝ৙ছী বড্ড৚ পুরান৚

ঢঙের কেমন এক গল্প যার নীতি বাক্য হল--
ঢঙ৙র ক৙঄ম৚ন এাক গল্প জার নীতী বাক্ক৚ হ৚ল৚--

“মূঢ় আড়ম্বর ও আত্মশ্লাঘার ফল জীবনে
মুঢ়৹ আড়ম্বর ও আত্তশ্লাঘর ফল জীবন৙ 

বিঘ্ন ও বৃহৎ ক্ষতি”--তা না? এ্যাঁ? 
বীঘ্ন ও ব্‍রীহৎ খতী” --তাই না? এ৙঄৺? 



 ০১২৩৪৫৬৭৮৯    ৳৫৬/-     ৉৫৬/-
 ০১২৩৪৫৬৭৮৯     ৳৫৬/-     ৉৫৬/-





এমনি আরও একটি কবিতা আছে(ভাষা এবং বানান-সংস্কারের পরে তা কেমন দাঁড়াবে তা দেখা যাক)--

বাঃ, ওই যে আকাশ ঢাকা     গহন-ঘন চিকুর আঁধার এমন
বাঃ, ওই জ৙ আকাশ ঢাকা     গহন-ঘন চীকুর আঁধার এামন
দেখিছ উপরে ঠায়,            অচিন্ত্য-ক্ষণে সাফ, ক্ষণে ভরা
দ৙খীছ উপর৙ ঠায়,              অচীন্ত৖-খন৙ সাফ, খন৙ ভরা
আকাশ সড়কে সজল একী গূঢ়       রঙিন বিদ্যুৎ দেখা যায়,
আকাশ শড়ক৙ শজল একী গুঢ়৹      রঙীন বীদ্দুৎ দ৙঄খা জায়,
ফুটিবে বুঝি কোন আলো-ফুল       অংশুর ডালিতে তথায়৤
ফুটীব৙ বুঝী কৗন্ আলৗ-ফুল          অংশুর ডালীত৙ তথায়৤

          উপরের কবিতাটিতে বাংলা নতুন-বানান লেখার জন্য যেসকল বর্ণ তথা স্বরবর্ণ, স্বরচিহ্ন, ব্যঞ্জনবর্ণ ইত্যাদি দরকার তার সবকটিই আছে৤ ব-১৯.২ থেকে ব-২০ অবধি অংশের জন্য দ্রষ্টব্য “প্রমা”-- জানু-মার্চ, ১৯৮৬, এবং এপ্রিল-জুন, ১৯৮৬)৤



ব-২১ বাংলা ইঞ্জিনিয়ারিং বর্ণমালা 

          বাংলা লিপির গঠন যদি এমন করা যায়, যা সহজে যন্ত্রপাতি দ্বরা আঁকা/লেখা যাবে, অর্থাৎ স্কেল ড্রইং করা যাবে, তাহলে বাংলা লিখন ব্যবস্থার এক সুন্দর বিধিবদ্ধ পরিবর্তন ঘটানো সম্ভব হবে৤ যে-ব্যবস্থায় মুদ্রণ-স্থান লাগবে বর্তমান অপেক্ষা প্রায় ৪০%শতাংশ কম, এবং প্রাসঙ্গিক ব্যয়ও অনুরূপ হারে কমে যাবে৤ এই নতুন গঠনের হরফ ব্যবহার করলে বাংলা লিখন-ব্যবস্থা বর্তমান জটিল ত্রিস্তর(three-tier/3-tier)থেকে কমে এক-স্তর(Monotier) বিশিষ্ট, তথা সরল-রৈখিক(linear) হবে, আর প্রধানত সে জন্যই মুদ্রণ-স্থান(printing space) কম লাগবে৤ বাংলা যুক্তবর্ণ লেখার পদ্ধতি অতি সহজ এবং সুন্দর হবে, প্রচলিত বিশুদ্ধ মোট প্রায় ৩৯৫ যুক্তবর্ণের মণ্ডরূপসমূহের সবগুলিই নিঃসন্দেহে বর্জন করা যাবে, এবং এতে কিন্তু যুক্তবর্ণ আরও সহজবোধ্য হবে৤  

       যুক্তবর্ণ নির্দিষ্ট-- c1C2 এবং c1c1C2 রীতিতে প্রায় সব সময়ে গঠন করা যাবে৤ 
১৤

২৤






হরফের বোধ্যতা(legibility) বাড়বে, যা বাংলা ছাপাকে স্বচ্ছ(transparent) করে তুলবে৤ যান্ত্রিক এবং হাতে হরফ-গাঁথার(composing) ব্যবস্থা সহজ হবে, কিবোর্ড(Keyboard) এবং হাতে হরফগাঁথার ডালা ছোট এবং সুবিধাজনক হবে৤ অবশ্য হাতে হরফ-গাঁথার দিন শেষ হয়ে এসেছে৤  




বাংলা নতুন-বানান -৫০



          সহজ এবং যুক্তিসঙ্গত তথা বিজ্ঞানভিত্তিক দৃষ্টিভঙ্গীর লিখন-ব্যবস্থার জন্য বাংলা শেখা, বাংলা লেখা, বাংলা পড়া সহজ হবে৤ হরফের এক্স-হাইট(X-height) দ্বিগুণ বেড়ে যাবে বলে তুলনামূলকভাবে একই মাপের হরফমুখ/টাইপ-ফেসের(Typeface) হরফ গঠন তথা ছাপা অনেক বড় হবে৤ টাইপ-ফেসের বিপুল সংখ্যা (প্রায় ৫৫০/৫৫৭) থেকে কমে তা মুষ্টিমেয় হবে(মাত্র ১৭% তথা মোটে ৯০+..টি হবে 




[ বাংলা ইউনিকোডে টাইপ সংখ্যা
অহনলিপি-বাংলা১৪

স্বরবর্ণ=১৬ (প্রাচীন দিনের সকল হরফ ধরে)
স্বরচিহ্ন=১৪                    
ব্যঞ্জনবর্ণ=৪২           
ব্যঞ্জনচিহ্ন=৮
সংখ্যা=১০
বিবিধ চিহ্ন= ৯০+ ...

সর্বাধিক কোড সংখ্যা ১২৮টি]৤ 


ইংরেজিতে লাগে সর্বমোট ৯৪টি)  আবার তা দিয়ে কোন কিছু লিখতে বা ছাপতে কোনও অসুবিধেও থাকবে না, বরং ছাপা আরও সুবিধাজনক হবে৤ এর ফলে সহজে নতুন নতুন টাইপফেস তৈরিও হবে, অর্থাৎ লিখন-ব্যবস্থা লিনিয়ার, তথা সহজ হওয়ায় লিপির আলংকারিক রূপ গড়ে উঠবে, যা বাংলায় প্রায় নেইই, অথচ ইংরেজিতে আছে অগণিত-- অঢেল৤  

          এই লিপি ব্যবহার করলে বাংলা কম্পিউটার ফন্ট-সফ্‌টওয়্যার তৈরি, ও ব্যবহার করা সহজ হবে৤ বাংলা হরফে সহজে বাংলায় ই-মেল(e-mail) করা যাবে, বাংলায় ডিজিটাল টাইম দেখা যাবে৤ 

ডিজিটাল টাইম:



এমনি ধরনের আরও নানা হরফে বাংলায় সময় দেখাবে--





ডিজিটাল ফন্ট স্ক্যান করে দেখানো হল৤ 
কম্পিউটার স্ক্রিনে এর ডিসপ্লে বেশ সুন্দর৤


          বাংলায় কম্পিউটিং-এর অন্যান্য কাজও সহজে করা যাবে৤ বাংলায় টেক্সট লেখা, ওয়ার্ড সার্চ, সর্টিং/ইনডেক্সিং, ইন্টারনেট সার্চিং --সরাসরি বাংলাতেই করা যাবে৤ বাংলা লিপিতে বাংলায় ওয়েবসাইট তৈরি করা যাবে৤ অর্থাৎ যাবতীয় কম্পিউটিং-এর কাজই বাংলায় করা সহজ হবে৤  

          নব-গঠনের এই লিপি ব্যবহার করে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে কম্পিউটারের সাহায্যে লেখার প্রচেষ্টা সফল হয়েছে৤ এরকম লেখার ভিডিয়ো ডিসপ্লে করা হয়েছিল ২৫-০৯-১৯৮২ তারিখে, 










এবং প্রিন্টার ইউনিটের সাহায্যে লেখা হয়েছিল ১৫-০৬-১৯৮৫ তারিখে৤




(দ্রষ্টব্য-- ”প্রসঙ্গ বাংলাভাষা“৤ পশ্চিমবঙ্গ বাংলা আকাদেমি প্রকাশিত প্রথম বই, ১৯৮৬)৤  

          ২১শে ফেব্রুয়ারি ১৯৮৪ তারিখে দৈনিক সংবাদপত্র ’আজকাল‘-এ ”বাংলা ইঞ্জিনিয়ারিং বর্ণমালা“ নিবন্ধটি প্রকাশিত হয়(পৃঃ-৬), এবং তারও আগে প্রকাশিত হয় ত্রৈমাসিক সাহিত্যপত্র ’সারস্বত‘ জুলাই-সেপ্টেম্বর, ১৯৭৫ সংখ্যায়(পৃ-১৪৬-১৫৩)৤ (এটি নিয়ে বিভিন্ন স্থানে লেখার প্রকাশক্রম -- ১৯৭৫ → ১৯৮২ → ১৯৮৪ → ১৯৮৫ → ১৯৮৬)৤ 

          বাংলার লিখন পদ্ধতি এমন যে, তাতে লেখার বা ছাপার জন্য ইংরেজি ছাপার চেয়ে স্থান বেশি লাগে৤ বাংলার লিখন পদ্ধতি হল ত্রিস্তর(3-tier), ফলে লাইনোটাইপ-এ কিংবা ডিটিপি তথা কম্পিউটার কম্পোজিং করা ছাপায় দেখা গেছে এক সেন্টিমিটার উচ্চতার হরফের জন্য মুদ্রণ-উচ্চতাজনিত খাড়াই স্থান লাগে দুই সেমি৤ এছাড়া, যুক্তবর্ণ ইত্যাদির অস্তিত্ব থাকার জন্য হাতে হরফ গাঁথার ছাপাখানায় অর্ধ সহস্রের বেশি টাইপ লাগে(প্রায় ৫৫০/৫৫৭), অর্থাৎ সহজ কথায় বাংলা লিখন-ব্যবস্থাজনিত কারণে মুদ্রণব্যয় বেশি হয়৤ কম্পিউটার চালিত অতি আধুনিক পিটিএস ব্যবস্থায়ও বাংলা মুদ্রণের অবস্থা সেই একই রয়ে গেছে৤ কারণ হরফের মূল গঠনে তো কোনও পরিবর্তন হয়নি৤ 

          বাংলা জ্যামিতিক গঠনের বর্ণমালা তথা ’বাংলা ইঞ্জিনিয়ারিং বর্ণমালা‘ এমন এক ধরনের বিশেষ লিপি-গঠন যে, এই লিপি ব্যবহার করলে মুদ্রণ সুন্দর হবে, পরিচ্ছন্ন এবং সহজ হবে৤ আর বাংলা ছাপার কাজে সামগ্রিকভাবে মুদ্রণব্যয় অনেক কমবে৤



বাংলা নতুন-বানান -৫১

          বাংলা লিপিলিখন ব্যবস্থার উন্নয়নে এবং অন্যান্যভাবে বাংলাভাষার এবং যাঁরা বাংলালিপি ব্যবহার করেন সেই অহমিয়া, মণিপুরি, ত্রিপুরি(ককবরক), সাঁওতালি, গারো, মুণ্ডারি ইত্যাদি ইত্যাদি ভাষার উন্নতি এবং অগ্রগতির সহায়ক হবে এই নব গঠনের বর্ণমালা৤ 

          প্রখ্যাত ভাষাবেত্তা অধ্যাপক ডঃ পবিত্র সরকার বাংলা ইঞ্জিনিয়ারিং বর্ণমালা সম্পর্কে বলেছেন--(১)বাংলা বর্ণমালার 3-tier চেহারাকে এড়িয়ে সেগুলোকে linear করা হয়েছে, (২)বাংলা বর্ণমালার প্রচলিত চেহারাকে স্বীকার ও গ্রহণ করা হয়েছে, কোন শৌখিন সংস্কার করা হয়নি, (৩)যুক্তব্যঞ্জনকে ভাঙা হয়েছে এবং লাইনোটাইপের ধরনে প্রথম ব্যঞ্জনকে ক্ষুদ্রাকার রাখা হয়েছে alphabet-এর ধরনে প্রতিটি ব্যঞ্জনকে সমান status দেওয়া হয়নি-- এতে বাংলা বর্ণমালারই চরিত্র রক্ষিত হয়েছে৤ 

 ()      




বাংলা ইঞ্জিনিয়ারিং বর্ণমালার সাহায্যে লিখে দেখানো হল-- 




নিচের পঙ্‌ক্তির শেষ শব্দটি হল “বাংলা” এটি ত্রিমাত্রিক করে লেখা/আঁকা৤













বাংলা নতুন-বানান -৫২

বাংলা ইঞ্জিনিয়ারিং বর্ণমালায় নতুন বানানে-- (কারিগরি বর্ণ)  




[দ্রষ্টব্য:-- সারস্বত(ত্রৈমাসিক) জুলাই-সেপ্টেম্বর ১৯৭৫, ও আজকাল, ২১শে ফেব্রুয়ারি ১৯৮৪, এবং ”প্রসঙ্গ : বাংলাভাষা“ -- পশ্চিমবঙ্গ বাংলা আকাদেমি প্রকাশিত প্রথম গ্রন্থ, ১৯৮৬ ]৤



বাংলা ‘আধুনীক’ লীপীত৙ ল৙খা :--  





বাংলা নতুন-বানান -৫৩

বাংলা ‘ক্‍রীশ’ লীপীত৙ ল৙খা :-- 





বাংলা নতুন-বানান -৫৪


বাংলা ‘ডৗরা’ লীপীত৙ ল৙খা :--








বাংলা ‘ চারুবর্ণ ’ লীপীত৙ ল৙খা :-- 





বাংলা নতুন-বানান -৫৫


বাংলা ‘ডীজীটাল’ লীপীত৙ ল৙খা :--









বাংলা ‘শৗভন’ লীপীত৙ ল৙খা :--







বাংলা “বই” লীপীতে ল৙খা:--






বাংলা নতুন-বানান -৫৭


          ব-২২৤ বাংলাভাষা সংস্কারের পরে, এবং বাংলা বর্ণমালার ও লিপির গঠন সংস্কার করার পরে মুদ্রণ কাজের জন্য কার্যকরভাবে বাংলা যে টাইপফেস লাগবে তার হিসেব হল:-- 
(ক) স্বরবর্ণ ---    (৫)                            
(খ) স্বরচিহ্ন --   (৬)                             
(গ)ব্যঞ্জনবর্ণ (C2)--[৩৫, মূল ব্যঞ্জনবর্ণ, তথা যুক্তবর্ণের দ্বিতীয় বর্ণ]--
 পূর্ববর্ণের ক্রম অনুসারে-- ৫৬টি যুক্তধ্বনি 

কখগঘঙচছজঝ  টঠডঢ  তথদধনপফবভম  রল    সহড়ঢ়য়ৎংঃঁ


(ঘ)যুক্তবর্ণ(c1)-- [সহযোগী ব্যঞ্জনবর্ণ তথা যুক্তবর্ণের প্রথম বর্ণ]--

ক্ন ক্‍র ক্ল; খ্ম খ্‍র; গ্‍র গ্ল; ঘ্ন ঘ্‍র; চ্চ; জ্‍র; ট্‍র; ড্‍র; ত্ত ত্‍র
থ্‍র; দ্‍র; ধ্ধ ধ্ম ধ্‍র; ন্‍র; প্‍র প্ল; ফ্‍র ফ্ল; ব্ব ব্‍র ব্ল; ভ্‍র ভ্ল
ম্‍র ম্ল; ৒র; ল্‍র; শ্ট শ্ন শ্ল শ্শ শ্ট্‍র
স্ক স্খ স্ত স্থ স্ন স্প স্ফ স্ম স্‍র স্ল স্ক্‍র স্ত্‍র স্প্ল স্ম্‍র; হ্‍র হ্ল =২৩টি





ক্ন ক্‍র ক্ল; খ্ম খ্‍র; গ্‍র গ্ল; ঘ্ন ঘ্‍র; চ্চ; জ্‍র; ট্‍র; ড্‍র; ত্ত ত্‍র; 
থ্‍র; দ্‍র; ধ্ধ ধ্ম ধ্‍র; ন্‍র; প্‍র প্ল; ফ্‍র ফ্ল; ব্ব ব্‍র ব্ল; ভ্‍র ভ্ল; 
ম্‍র ম্ল; ৒র; ল্‍র; শ্ট শ্ন শ্ল শ্শ শ্ট্‍র; 
স্ক স্খ স্ত স্থ স্ন স্প স্ফ স্ম স্‍র স্ল স্ক্‍র স্ত্‍র স্প্ল স্ম্‍র; হ্‍র হ্ল =২৩টি





পূর্ববর্ণ-- c1 = ক খ গ ঘ চ জ ট ড ত থ দ ধ ন 
                        প ফ ব ভ ম র ল শ স হ =২৩


১৤ক্ন ক্‍র ক্ল;
২৤ খ্ম খ্‍র
৩৤গ্‍র গ্ল;
৪৤ ঘ্ন ঘ্‍র;
৫৤ চ্চ;
৬৤ জ্‍র;
৭৤ ট্‍র;
৮৤ ড্‍র;
৯৤ ত্ত ত্‍র
১০৤ থ্‍র;
১১৤ দ্‍র;
১২৤ ধ্ধ ধ্ম ধ্‍র; 
১৩৤  ন্‍র;
১৪৤ প্‍র প্ল;
১৫৤ ফ্‍র ফ্ল;
১৬৤ ব্ব ব্‍র ব্ল;
১৭৤ ভ্‍র ভ্ল
১৮৤ ম্‍র ম্ল;
১৯৤ ৒র;
২০৤ ল্‍র;
২১৤ শ্ট শ্ন শ্ল শ্শ শ্ট্‍র
২২৤ স্ক স্খ স্ত স্থ স্ন স্প স্ফ স্ম স্‍র স্ল স্ক্‍র স্ত্‍র স্প্ল স্ম্‍র;
২৩৤ হ্‍র হ্ল






(ঙ) সংখ্যা --   (১০)   ০ ১ ২ ৩ ৪ ৫ ৬ ৭ ৮ ৯
                    

(চ) হস্ ---    (১)   

                        
(ছ) বিবিধ(ধরি) --    ২০       !  @  ( ) - = +  .  , / ? ৤
                -----------------------------
                         ১০০


          এসকল ছাড়া,

(১)অন্যান্য যতি চিহ্ন, (২)অঙ্কের অন্যান্য চিহ্ন, (৩)বিজ্ঞান চিহ্ন, (৪)বিবিধ চিহ্ন =৪০ (ধরি),
সুতরাং, মোট টাইপফেস লাগবে --  ১০০+৪০=১৪০ (ধরি)৤ তুলনীয়, ইংরেজিতেও টাইপফেস লাগে প্রায় ১৪০টি৤    




        [দ্রঃ__ সর্বান্তিক “অহনলিপি-বাংলা১৪” ফন্টের কিবোর্ডে এই সংখ্যার কিছু হেরফের হয়েছে৤  
কিটপ(Keytop)=৪৭, প্রতিটি কিটপে হরফ/চিহ্ন হতে পারে ৪টি করে, তাই ৪৭×৪=১৮৮ সর্বমোট হওয়া উচিত, কিন্তু এর থেকে কারিগরি প্রয়োজনে তিনটি কিটপ ব্যবহার করা হয়েছে৤ তাই বাকি ১৮৫টি কিপ্রেস(Key press) ব্যবহার করে অহনলিপি-বাংলা ফন্ট কিবোর্ড গঠন করা হয়েছে৤

এসবের বিবরণ এরকম--

১৤উপরের সারি --৫২
          (ক)Shft--১৩           °  
          (খ)Shft+AltGr--১৩  →মোট ২৬
          (গ)Normal--১৩ 
          (ঘ)AltGr--১৩         →মোট ২৬
২৤উপর থেকে দ্বিতীয় সারি--৫১
          (ক)Shft--১৩              °
      (খ)Shft+AltGr--১২ + ১টি কারিগরি কাজে ZWSP →মোট ২৫
      (গ)Normal--১৩
      (ঘ)AltGr--১৩       →মোট ২৬
৩৤উপর থেকে তৃতীয় সারি(নিচ থেকে দ্বিতীয় সারি)--৪২
          (ক)Shft--১১                   °
          (খ)Shft+AltGr--১০ +১টি কারিগরি কাজে ZWJ  →মোট ২১
          (গ)Normal--১১ 
          (ঘ)AltGr--১০    +১টি কারিগরি কাজে ZWNJ   →মোট ২১
৪৤নিচের সারি --৪০
          (ক)Shft--১০             °  
          (খ)Shft+AltGr--১০  → মোট ২০
          (গ)Normal--১০ 
          (ঘ)AltGr--১০          →মোট ২০
সর্বমোট=৫২+৫১+৪২+৪০=১৮৫ বাকি তিনটি কারিগরি কাজে লাগানো হয়েছে৤ (১৮৫+৩=১৮৮)
কিটপ(Keytop)=৪৭, প্রতিটি কিটপে হরফ/চিহ্ন হতে পারে ৪টি করে, তাই ৪৭×৪=১৮৮ সর্বমোট৤] 



বাংলা নতুন-বানান -৫৮

          উপসংহার

          ভাষা হল বহতা নদীর মতো স্বচ্ছন্দ-গতি, সংস্কার করার পরেও তাই কিছু কিছু ব্যতিক্রম থেকে যাবেই৤ নতুন ব্যতিক্রম তৈরিও হবে৤ বানান সরলীকরণের ফলে অভ্যাসের জন্য কোনও কোনও ক্ষেত্রে হয়তো সত্যিই কিছু অসুবিধা দেখা দেবে, তবে একটু চেষ্টা করে তা কাটিয়ে উঠতে হবে৤  

 যেমন--
অভিনেত্রী সংঘ=অভীন৙ত্‍রী শংঘ,
অভিনেতৃ সংঘ=অভীন৙ত্‍রী শংঘ

নতুন ব্যবস্থায় দুটোর বানান একই৤ এই অসুবিধা কাটিয়ে ওঠার ব্যবস্থা করতে হবে৤ একটু চেষ্টা করলেই তা সম্ভব হবে৤ ধরি, অভিনেত্রী সংঘ=অভীন৙ত্‍রী শংঘ লেখা হল, এবং অভিনেতৃ সংঘ=অভীন৙ৎরী শংঘ লেখা হল৤ তেমনি, নৃত্ত=ন্‍রীত্ত, নৃত্য=ন্‍রীত্ত দুটোর বানান একই রইল, কারণ দুটো শব্দের অর্থই নাচ৤ অবশ্য এসব বিরল সমস্যা৤

          আবার কিছু ক্ষেত্রে উচ্চারণ বর্তমান শিথিলতা ছেড়ে যথাযথ হবে, যেমন-- স্নেহার্দ্র=স্ন৙হা৒দ্‍র, আর্দ্র=আ৒দ্‍র, কর্ত্রী=ক৒ত্‍রী৤

          আগে ভাবনায় আসেনি এমন কিছু অসুবিধাও প্রাথমিকভাবে দেখা দিতে পারে৤ তবে প্রচলিত বর্তমান ব্যবস্থায় কিন্তু সে তুলনায় অনেক বেশি বিভ্রাটের অস্তিত্ব আছে৤ নতুন ব্যবস্থায় বিভ্রাট কিন্তু বর্তমানের চেয়ে অনেকখানি কমবে, যদিও আপাতভাবে বিভ্রাট বাড়বে বলে মনে হবে৤

          বাংলায় প্রচলিত সকল শব্দের বানান নির্দিষ্ট করে লেখা হোক আগে, তারপরে তা থেকে খুঁজে নেওয়া হোক প্রকৃত পক্ষে কী কী ধ্বনি এবং বর্ণমালা বাংলায় আছে৤ এজন্য যত চলতি শব্দ আছে, এবং যেসব শব্দ সাধারণ বাংলায় বলা হয়, তা অহমিয়া, আরবি, ইংরেজি, উর্দু-হিন্দি-হিন্দুস্থানী, ওডিয়া, চিনা, জাপানি, জার্মান, তামিল, তেলুগু, ফরাসি, ফার্সি(পার্শি), মুণ্ডারি, রুশ, স্প্যানিশ, সংস্কৃত, সাঁওতালি ইত্যাদি ইত্যাদি যা-ই হোক, সবই তালিকায়িত করতে হবে৤

          অবশ্য বিদেশি আগত শব্দের ধ্বনির গুরুত্ব স্বভাবতই বাংলায় কম৤ নিজের রীতি-প্রকৃতি অনুযায়ী বলা এবং লেখার উপরেই বেশি জোর দিতে হবে৤ ইংরেজিতে টে(ই)ব্‌ল্/ঠে(ই)ব্‌ল্ [ট৙(ই)ব্‌ল্ table,  উচ্চারণটা  ট এবং ঠ-এর মাঝামাঝি] বললেও আমরা কিন্তু যেমন বলছি তেমনি টেবিল tebil বলব, বাংলায় টেবিল-ই (tebil) লিখব৤ 
          বানান, বর্ণমালা, ভাষাসংস্কার সম্পর্কে এই বলা যায় যে, মানুষ স্বাধীন-- সে যেমন ভাষার উদ্ভাবন করেছে,তেমনি এর স্বাভাবিক পরির্তনও সে ঘটিয়ে চলেছে সচেতন,এবং অসচেতন দু-ভাবেই (ভাষা তো আর নিজে নিজেই পালটে যায় না৤ ভাষার যে ক্রমিক পরিবর্তন হয় তাও মানুষই করে তবে তা অসচেতনভাবে)৤ ভাষা মানুষকে অনুসরণ করে৤ ব্যাকরণ তাই ভাষাকে অনুসরণ করবে-- ব্যাকরণকে ভাষা অনুসরণ করবে না৤ যুগে যুগে তাই ভাষার ব্যাকরণ এবং বানান সংস্কার করা দরকার৤ তথাকথিত দেবভাষা সংস্কৃতই হল “সংস্কার-কৃত” বৈদিক ভাষা, এর নাম সে জন্যই ‘সংস্কৃত’, অর্থাৎ সংস্কার-কৃত, যদিও এই বিশেষ শব্দটি মূলত বিশেষণ৤

          বাংলা বানানের প্রস্তাবিত এই সংস্কার আধুনিক যুগের প্রয়োজনের কথা মনে রেখেই করা হয়েছে(এসএমএস/ইমেল/ডিজিটাল টাইম বাদ দিয়ে এযুগ চলে না)৤ সংস্কারের মূল সুবিধাটা হবে এই যে, সংস্কারের পরে বানানভুলের আশঙ্কা প্রায় থাকবেই না৤ 


বাংলা নতুন-বানান -৫৯


          শব্দ যত লৌকিক হয়, তার উচ্চারণ এবং বানান ততো সহজ হয়৤ আবার সেসবের পরিবর্তনও হয় খুব সহজে এবং বেশ তাড়াতাড়ি৤  

          অগ্রগতির প্রতি আগ্রহ গভীরভাবে পোষণ না করলে এই পরিবর্তনের সঙ্গে সামগ্রিকভাবে একতালে চলা কঠিন৤ হাতের লেখায় এ পরিবর্তনকে পুরোটা ধরতে অবশ্যই সময় লাগবে, আপাতত ছাপাখানায় এ পরিবর্তনকে গ্রহণ করা যাক, এবং হাতের লেখা যেমন চলছে তেমনি চলুক৤ কলম ঘুরিয়ে, পেঁচিয়ে বা টেনে লিখতে এখনকার লেখাই হয়তো আরও কিছুকাল সুবিধাজনক হবে৤ পরে এ পরিবর্তন হাতের লেখায়ও যতটুকু হওয়া দরকার কালের নিয়মে তা ধীরে ধীরে আপনিই এসে যাবে৤

          বাংলা বানান উচ্চারণভিত্তিক করে লেখা হবে-- এ কথাটির অর্থ হল, যথাসম্ভব উচ্চারণমূলক করে লেখা হবে৤ তা ৯০/৯৫ শতাংশ হলেই চলবে৤ উচ্চারণভিত্তিক করে লেখার শর্ত কিন্তু মিউজিক্যাল নোটেশনের মতো সূক্ষ্মতর এবং সূক্ষ্মতম স্বরের ওঠানামা অনুযায়ী প্রতিটি বাগ্‌ভঙ্গীকে চিহ্নিতকরণ নয়, যাকে বলে ফোনেটিক  বানান-- তা করার দরকার নেই, ফোনিমিক বানানই হোক      [”উচ্চারণে ধ্বনির যে-পরিবর্তনগুলি আমাদের বোধে বিশেষ প্রকট ও গ্রাহ্য-- শুধু সেগুলিকে বানানে দেখালেই হবে৤“ -- পবিত্র সরকার, বাংলা বানান সংস্কার : সমস্যা ও সম্ভাবনা, পৃঃ-৩০]৤

          লিপির মাধ্যমে ভাষার প্রকাশ কখনও মিউজিক্যাল নোটেশন হয়ে উঠতে পারে না, সাধারণ লেখাপড়ায় স্বরের সেরকম অতিসূক্ষ্ম ওঠানামাকে প্রকাশ করা লিপির কাজ নয়, বা উদ্দেশ্যও নয়, তাই উচ্চারণমূলক করার অর্থ হল লিপির সাহায্যে সাধারণভাবে সারাদেশের সকল মানুষের ব্যবহার যোগ্য উপায়ে ধ্বনির প্রকাশ৤ ধ্বনির সে প্রকাশ হবে যথাসাম্ভব সাধারণ রীতি-প্রকৃতির৤ অসম্ভব কোনও প্রচেষ্টা এর পিছনে কাজ করবে না৤


খেয়েছ?(হ্রস্ব আ)  
খেয়েছ?(সাধারণ আ)   
খেয়েছ?(দীর্ঘ আ)    →→
খেয়েছ?(প্লুত আ) → → → →

      এসব কি সাধারণ লেখায়-- বানানে দেখানো হবে, বা দেখানো যাবে? হ্রস্ব-ই এবং দীর্ঘ-ঈ
(ই, ঈ)-এর ব্যাপারটাও এমনি৤ হ্রস্ব-ই এবং দীর্ঘ-ঈ(ই, ঈ) সংগীত এবং আবৃত্তিতে আছে৤ এখানে যেমন হ্রস্ব আ, সাধারণ আ, দীর্ঘ আ, প্লুত আ ধ্বনি --এই চার রকম উদাহরণ দেখানো হয়েছে, সেটিও ঠিক তেমনি৤ সাধারণ লেখায় তা দেখানোর দরকার নেই৤ দূরের কাউকে ডাকতে হলে যেমন ডাকা হয়-- দা--দা...া.. া...া...া করে, সাধারণ লেখায় কি তেমন দেখানো হয়, বা দেখানো উচিত?

          সাধারণ লেখাপড়া এবং বলায় দীর্ঘ-ঈ নেই৤ সংগীতে কড়ি, কোমল, মীড় আছে, সাধারণ লেখায় নেই৤ একজন উচ্চাঙ্গসংগীত গায়ক সুরের-যে সূক্ষ্ম ওঠানামা বোঝেন, ব্যবহার করেন, সাধারণ
অ-গায়কদের সেসবের কোনও প্রয়োজন আছে কি? ভাষা সাধারণ মানুষের বস্তু, সেখানে বেশি কালোয়াতি চলে না৤ ভাষাকে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে দূরে রাখার জন্য এসব করাও তাই ঠিক নয়৤


বাংলা নতুন-বানান -৬০

          কলের ভোঁ বাজে এক মিনিট ধরে, সেই ভোঁ বোঝাতে কতোগুলো ও-কার[ো] দেওয়া হবে? ক-টা ও-কার দিলে এক মিনিট হবে? অতীব সংগীত প্রতিভাসম্পন্ন গোঁ--ওঁ--ওঁ শব্দকারী টেবল ফ্যানটার কয়েক ঘন্টাব্যাপী গোঁ...‍‍‍ো...ওঁ... বোঝাতে কত হাজার, কত লক্ষ ও-কার দেওয়া দরকার?

          কথা বলার সময়ে লোকেরা বিভিন্ন বানানের বহু শব্দ উচ্চারণ করে বলেন, যেমন-- বিভীষিকা, বিজিগীষা, নিমীলিত ইত্যাদি৤ বলার সময়ে হ্রস্ব-ই, দীর্ঘ-ঈ বানান করে বলা হয় না(হ্রস্ব-ই, দীর্ঘ-ঈ সবই একই উচ্চারণে বলা হয়), অন্যেরা শব্দটা শোনেন-- বানানটা দেখতে পান না-- তবু সবটা সঠিকভাবে বোঝেন৤ সুতরাং লেখার সময়ে যদি বলার মতো করেই লেখা যায়, তবে লোকে তাও তেমনি সহজেই বুঝবেন-- বানানের অভ্যাসটা বানানো একটি দৃশ্য-অভ্যাস বলে, একটু অন্যরকম লেখা হলে, প্রথম-প্রথম বুঝতে একটু দেরি হবে, অভ্যাসটা পালটাতে যতটুকু সময় লাগে৤ বানানটা অমোঘ নয়, প্রাকৃতিক নিয়ম নয়, তাই তার যুক্তিসংগত পরিবর্তন করায় কোনও দোষ নেই, কোনও পাপ নেই, বাধা নেই৤ আমাদের উদ্দেশ্য হবে ”যেমন বলি, তেমন লিখি“৤ উদ্দেশ্যটা এই-- সহজে যেন বুঝতে পারি, সহজে যেন লিখতে পারি, সহজে যেন পড়তে পারি৤

          ভাষা ও বানান সংস্কারের পরিপ্রেক্ষিতে যে-কথাটা বেশি করে প্রশ্ন হয়ে দেখা দেবে তা হল সংস্কৃত লেখা হবে কেমন করে? বর্ণ বর্জনের পর নতুন-বানানে প্রচলিত কায়দায় সফলভাবে সংস্কৃত লেখা যাবে না, কারণ বাংলা বর্ণমালা তো সংস্কৃত বর্ণামাল থেকে নেওয়া, অর্থাৎ বাংলা বর্ণমালা হল মূলত সংস্কৃত বর্ণমালা, তাই নতুন-বানানে, নতুন-বানান রীতিতে, বর্ণবর্জনের পরে তা হয়ে উঠবে একান্তভাবে বাংলা বর্ণামালা, তা আর পুরোপুরি সংস্কৃত বর্ণমালা থাকছে না৤ ছিল শুঁয়োপোকা, হয়ে গেল প্রজাপতি৤  শুঁয়োপোকা থেকেই প্রজাপতি হয়, অথচ শুঁয়ো হল বুকে হাঁটা পোকা, আর প্রজাপতি হল উড়ন্ত পতঙ্গ৤ চেহারা, চরিত্রে, কাজে তাই মিল থাকবে কমই৤

          সংস্কৃত তো ইংরেজি হরফ তথা রোমান হরফে লেখা যায়, লেখা হয়৤ রোমান হরফে সংস্কৃতের তুলনায় ধ্বনির অপ্রতুলতা, তবু তা লেখা হয় অনায়াসে, বাংলা নতুন-বর্ণমালায় তা হলে তা লেখা যাবে না কেন?

          সুতরাং নতুন রীতিতে নতুন-বানানে সংস্কৃত তেমন করে লেখা যাবে না, তাই সংস্কৃত লিখতে হবে বর্তমানে প্রচলিত বর্ণমালার সাহায্যে, কারণ সংস্কৃতও তো ‘উচ্চারণ-ভিত্তিক’ করে লেখা হয়, সুতরাং যে ধ্বনি বা বর্ণগুলি বাংলায় নেই তা বর্জন করায়, তা দিয়ে সংস্কৃত লেখায় অসুবিধা হবে, তাই বিশেষ বিশেষ ছাপাখানায়/ফন্ট সফ্‌ওয়্যারে প্রচলিত বাংলা হরফ তথা বর্ণমালা রক্ষা করতে হবে সংস্কৃত লেখার জন্য৤ সর্বত্র নয়৤ [ইউনিকোডে সংস্কৃত বর্ণমালা রক্ষিত আছে, তাই ‘অহনলিপি-বাংলা১৪’ ইউনিকোড ফন্টে তা আছেও]৤ অহনলিপি-বাংলা১৪ ফন্ট সফ্‌টওয়্যারটিতে সংস্কৃত বর্ণমালা আছে৤ এটি দিয়ে নতুন এবং চলতি বানান সবই পুরোটা লেখা যাবে৤ সংস্কৃতও লেখা যাবে৤ তেমন বিশেষভাবে এটি তৈরি করা হয়েছে৤ কিন্তু সংস্কৃত লেখার সুবিধা হবে, এই কারণ দেখিয়ে, বাংলার পক্ষে অপ্রয়োজনীয় হরফগুলোকে রেখে দেওয়া হবে না৤ (হামানদিস্তায় থেঁতো করে মা পান খান, তাই আমাকেও তা খেতে হবে, স্রেফ তাকে অনুসরণ করার জন্য, আর সে জন্য হামানদিস্তা রাখতে হবে আমার বটুয়াতে?)

          সংস্কৃতকে সঠিকভাবে লেখা এবং প্রকাশ করার জন্য যেমন পাণিনির যুগে বৈদিক ভাষাকে সংস্কার করা হয়(তাই তার নাম হয় “সংস্কৃত” ভাষা, অর্থাৎ সংস্কার-কৃত/সংস্কার-করা ভাষা), সেই একই যুক্তির ভিত্তিতে বাংলাভাষাকেও সঠিকভাবে লেখা এবং প্রকাশ করার জন্য, বর্ণমালা এবং বানান, তথা ভাষা সংস্কার করতে হবে আজকের এযুগে-- আজকের এই আধুনিক যুগের উপযোগী করে-- আজকের আধুনিক 
-যুগের ( e-AGE / e-ERA

উপযোগী করে৤ খড়ম ত্যাগ করে এখন বুট পরার দিন, প্যান্ট শার্ট টাইয়ের সঙ্গে এখনও কি খড়ম চলতে থাকবে? তাহলে প্যান্টশার্টও চলতে পারে না৤ আধুনিক যুগটাই বাদ দিতে হয়৤



বাংলা নতুন-বানান -৬১

          এখানে বলে রাখি, বাতিল বাংলা বর্ণ এবং চিহ্নগুলি প্রয়োজনে উদাহরণ হিসেবে দেখানোর জন্য কিবোর্ডেই রাখা আছে৤ সুবিধার জন্য কিবোর্ডকে দুটি ভাগে দেখানো হয়েছে কিন্তু তা একটি কিবোর্ডই৤ মুখ্য কিবোর্ড হল প্রমিত(Satandard) কিবোর্ড, এবং অন্যটি হল বিতত(Extended) কিবোর্ড৤ [নন-ইউনিকোডের জন্য একটি অন্য কিবোর্ড আছে সেটি হল প্রসর্পণ[Progress] কিবোর্ড৤ তবে এখন আর নন-ইউনিকোডের দিন নেই]৤ ইউনিকোডের কিবোর্ড ব্যবহার করে সংস্কৃতও লেখা যাবে৤ খুব দুশ্চিন্তায় ভেঙে পড়ার কারণ নেই৤  


          তবে বাংলায় প্রচলিত ৩৯৫টি বিশুদ্ধ যুক্তবর্ণকে মাত্র দুটি(ক্ষ, জ্ঞ) মণ্ড হরফে সীমায়িত করা গেছে[আগের করা কিবোর্ডে এটা ছিল ৫টি মণ্ড হরফ-- ক্ষ/ক্ষ  জ্ঞ —ও —এ ষ৏ ]৤ অন্য সকল যুক্তবর্ণই স্বচ্ছ করে লেখা হবে৤ তাই, বাকিটা আর পুরানো মণ্ডহরফে ফিরবে না৤ নতুন অহনলিপি-বাংলা১৪ (AhanLipi-Bangla14) ফন্টে যেমন সহজে লেখা যাবে-- অর্পণ, অগণন, সংস্কৃত, কার্য্য, মুহূর্ত, মণ্ড ঋতু, বৌদি ইত্যাদি৤ 

          নতুন বানানের ক্ষেত্রে যেসকল হরফ বা চিহ্ন বর্জিত হয়েছে, বা প্রাচীন দিনে ছিল, তার খতিয়ান এরকম-- 
ি ঈ ঊ ূ ঋ ৃ (ঋ+ৃ=)ৠ ৄ  ঌ ৢ  ৡ ৣ        ঔ = ১০+=১৬
ঞ/  ণ/  য ‍্য  ‍্র   ‍র্‍়    ৰ/    ষ/    ক্ষ/ক্ষ  জ্ঞ  —ও/‍—ও  —এ ষ৏  =১৯+=২২

এছাড়া, অন্যান্য চিহ্ন ইত্যাদি আছে বেশ কিছু৤ সেসব চিহ্ন দেখতে হলে কিবোর্ড দেখা দরকার৤

          আত্মীয়/আত্তীয়, অচিন্ত্য/অচিন্ত৖, কৃষ৏ /কৃষ্ণ/ক্‍রীশ্ন, বিজ্ঞান/বিজ্‍ঞান/বীগ্গাঁন/বীগ্গ৙঄৺ন, সংস্কৃত/শংস্ক্‍রীত,  প্রত্যুত/প্‍রত্তুত, বর্ণ/ব৒ন, প্রথম/প্‍রথম  ইত্যাদি/ইত্ত৙঄দী৤

[বাংলা নতুন-বানানে স্বরচিহ্নগুলি কিছুটা পৃথক
 অ=৹  আ=঄  ই= ী  উ= ু  এ=৙  এা=৙঄   ও=‍ ৚ ]

          স্বরবর্ণের নতুন লিপি ‘এা’ হাতে করে একটানে লেখা যাক-- 

(১), 



            ‘এ’ বর্ণটির বাম দিকের বাহুটি উপরের দিকে বর্ধিত করে হরফটির মাথার উপর দিয়ে ঘুরিয়ে ডান দিকে এনে আ-কার দিতে হবে--
 





          শব্দ শেষের ”র“ যদি আমরা একটানে লিখতে পারি, তবে ‘র’-এর বিন্দু বাদ পড়ে যাবার ভয় থাকবে না-- র=


বাংলায় ‘র’ সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত বর্ণ৤ ফলে এর তলাকার বিন্দু বাদ পড়ে যাবার আশংকাও বেশি৤ তলাকার বিন্দু হাতে করে লেখার সময়ে বাদ পড়ে যেতে পারে, বা ছাপায় বোঝা নাও যেতে পারে, তখন ‘নরশ্রেষ্ঠ’ নাকি ‘নবশ্রেষ্ঠ’ তা বোঝা কঠিন হবে৤

          আসল সমস্যা হল এই যে, একই লিপি দিয়ে বাংলাও লেখা হয়, এবং সংস্কৃতও লেখা হয়৤ সংস্কৃত থেকে নেওয়া শব্দ বাংলায় সংস্কৃত বানানেই লেখা হয়ে এসেছে এতদিন ধরে-- আজ সেই সকল শব্দকেই “সংস্কৃত” বানানে না লিখে বাংলা হরফে ‘বাংলা বানানে’ লিখতে গিয়ে মনে বিভ্রান্তি, দ্বিধা এবং স্ববিরোধ এসে যাবে৤ মনে হবে যেন বাংলা ভাষাকে কোতল করা হচ্ছে, কিন্তু ব্যাপারটা ঠিক উলটো-- ভাষা সংস্কারের পরে নতুন-বানানে বাংলাভাষা স্বস্থানে স্বমহিমায় প্রতিষ্ঠিত হবে--
বাংলাভাষার আত্মপ্রতিষ্ঠা হবে৤ এত দিনে বাংলাভাষা কেবলমাত্র কথ্যভাষা হিসেবে নয় (সংস্কৃতের প্রভাব এড়িয়ে), লেখায়ও বাঙালির বাংলাভাষা হয়ে উঠবে৤



বাংলা নতুন-বানান -৬২

          একজন শিক্ষিত গুণী লোক বাংলা লিখতে গিয়ে বানান ভুল করবেন এটা মোটেই ভালো কথা নয়৤ আর সে ভুলটা বা ভুলগুলোকে তাঁর চেষ্টার পরাজয় বলে ধরতে হবে? তিনি কি সত্যিই তেমন অদক্ষ? তা তো মোটেই নয়৤ তবে? তবে কেন এমন হচ্ছে? 

          বানান এমন হবে যে, বানানে কখনও ভুল হবে না৤ বানান হবে অনায়াস৤ নতুন প্রস্তাবিত বানানে ভুল করতে হলে বরং চেষ্টা করতে হবে, কৌশল করতে হবে৤ গভীর জ্ঞানমূলক রচনায় বা আলোচনায় মনোযোগের একটা বড় অংশ যদি বানান তার দিকে টেনে নেয়, তাতে লিখিত আলোচনায় অমনোযোগ  সূচিত হয়ে জ্ঞান খণ্ডিত হয়, স্তিমিত হয়৤ সুতরাং জ্ঞান-আলোচনার স্বার্থে বাংলা বানানকে সহজ, সরল এবং অনায়াস করতে হবে৤ 

          বাংলাভাষা ও বানানকে যেন আমরা কখনও আর অবচেতনেও সংস্কৃতের চোখ থেকে না দেখি, সংস্কৃতের চেয়ে ছোটো হিসেবে না দেখি৤ সেটা হলে, তা বাংলাভাষার অবমাননা হবে৤     

বাংলা আমাদের ভাষা, বাংলা আমাদের গর্ব৤ 

   সোনার বাংলা 




কেবল মুখের কথা নয়, মনের কথা-- বুকের কথা হোক৤


----   ০০০  ----


গ্রন্থ-সহায়তা/তথ্যপঞ্জী
==============

১৤অজ্ঞাত লেখক-- ফেব্রুয়ারি, ১৯৮৩ -- নতুন বাংলা বানান -- সাংস্কৃতিক খবর-- ২য় বর্ষ, ফেব্রুয়ারি, ১৯৮৩-- পৃঃ ১৭-৩৩৤ কোলকাতা৤ [প্রধান ঋণ এই নিবন্ধটির কাছে]৤ (নিবন্ধটি আসলে লিখেছেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের প্রধান প্রয়াত অধ্যাপক খ্যাত কবি এবং শ্রেষ্ঠ অভিধান ”জাতীয় অভিধান“-এর সম্পাদক ডঃ জগন্নাথ চক্রবর্তী)৤
২৤গিরিশ মনোজকুমার দ. -- ভাষার প্রাণচিহ্ন-- সম্পাদক, সঞ্জীবকুমার বসু-- সাহিত্য ও সংস্কৃতি-- অক্টোঃ-ডিসেঃ, ২০০০, জানুঃ-মার্চ, ২০০১ (কার্তিক -চৈত্র ১৪০৭), পৃঃ ৪৮৮-৫০৪, কোলকাতা৤
৩৤গিরিশ মনোজকুমার দ.-- বাংলা বানান :  সংস্কার-কাজ শুরু হোক-- সম্পাদক, সঞ্জীবকুমার বসু-- সাহিত্য ও সংস্কৃতি-- অক্টোঃ-ডিসেঃ, ২০০২, জানুঃ-মার্চ, ২০০৩(কার্তিক -চৈত্র ১৪০৭), পৃঃ ৩৬৮--৩৯৭, কোলকাতা৤
৪৤গিরিশ মনোজকুমার দ.-- বাংলা বানান :  সংস্কার-কাজ শুরু হোক-- সম্পাদক, বিপ্লব দাশগুপ্ত-- নন্দন-- ৩৯ বর্ষ, অষ্টম সংখ্যা, আগস্ট-২০০৩, পৃঃ ৩৬-৪৮, কোলকাতা৤
৫৤গিরিশ মনোজকুমার দ.-- ১৩ ফেব্রুয়ারি, ২০০৪-- যুক্তাক্ষর সম্পর্কিত আলোচনা (চিঠি)-- আনন্দবাজার পত্রিকা-- ৮২ বর্ষ, ৩২৮ সংখ্যা, ২৯মাঘ ১৪১০, পৃঃ ৪, কোলকাতা৤
৬৤গিরিশ মনোজকুমার দ.-- ২৫মার্চ, ২০০৪-- বাংলা ভাষা ও বানান সম্পর্কিত আলোচনা(চিঠি)-- আনন্দবাজার পত্রিকা-- ৮৩ বর্ষ, ১৯ সংখ্যা, ১১চৈত্র ১৪১০, পৃঃ ৪, কোলকাতা৤
৭৤গিরিশ মনোজকুমার দ.-- চারুভাষা বাংলা-- সম্পাদক, অনাদিরঞ্জন বিশ্বাস-- বাক্‌প্রতিমা--৫ম বর্ষ, দ্বাদশ সংখ্যা-- কার্তিক ১৪১১, অক্টোবর, ২০০৪, শারদ সংখ্যা(৬০) -- পৃঃ ৬১-৬৬৤ আন্দামান থেকে প্রকাশিত৤ 


বাংলা নতুন-বানান -৬৩


৮৤ঘোষ, দেবপ্রসাদ-- ১৯৩৯/১৩৪৬-- বাঙ্গালা ভাষা ও বানান (দ্রষ্টব্য পৃঃ ১০)-- কোলকাতা৤ মডার্ন বুক এজেন্সি, কোলকাতা৤
৯৤চক্রবর্তী, অভিজিত-- ৮ এপ্রিল, ১৯৭৮ -- বাংলা বানান (চিঠি)-- দেশ (সাপ্তাহিক-- ৪৫ বর্ষ ২৩ সংখ্যা, পৃঃ ৫)৤ কোলকাতা৤
১০৤চক্রবর্তী, জগন্নাথ-- ১১ মার্চ, ১৯৭৮ -- বাংলা বানান সংস্কার প্রস্তাব -- দেশ(সাপ্তাহিক)--৪৫ বর্ষ ১৯ সংখ্যা/২৭ ফাল্গুন, ১৩৮৪ --পৃঃ ৪১-৪৬৤ কোলকাতা৤
১১৤ চক্রবর্তী, শিশির -- আধুনিক বাংলা লিপির জন্মকথা-- সকাল, শারদীয়-- ১৪০০ (আজকাল প্রকাশনা)
--পৃঃ ৩৪৪-৪৬৤ কোলকাতা৤
১২৤চৌধুরী, মুনীর-- জুলাই, ১৯৭৬--বাঙলা গদ্যরীতি(দ্বিতীয় মুদ্রণ)--ঢাকা৤ বাংলা একাডেমী, ঢাকা৤(দ্রঃ-- পরিশিষ্ট-- পূর্ববঙ্গ সরকারি ভাষা-কমিটি সোপারেশ, ১৯৪৯৤ Report of the East Bengal Language Committee,1949, পৃঃ ১০৩-১১০৤
১৩৤ ঐ  ---     ---    --- ”বাঙলা বানান-সংস্কার“ (বিশেষজ্ঞ পরিষদ) [পরিশিষ্ট]-- পৃঃ ১১১-১১৪৤
১৪৤ঠাকুর, ধীরেন্দ্রনাথ-- ১৯৫৪(১৩৬১)-- বাংলা উচ্চারণ কোষ(প্রথম প্রকাশ)--কোলকাতা৤বুকল্যান্ড লিঃ
১৫৤ঠাকুর, রবীন্দ্রনাথ-- ১৯৮৪(বৈশাখ ১৩৯১)--বাংলা শব্দতত্ত্ব(তৃতীয় স্বতন্ত্র সংস্করণ)--কোলকাতা৤ বিশ্বভারতী গ্রন্থনবিভাগ৤
১৬৤দত্ত, প্রসূন--২৩ ডিসেম্বর, ১৯৮২--লিনিয়ারিটি প্রসঙ্গে(চিঠি)--আনন্দবাজার পত্রিকা--৬১বর্ষ, ২৭৬ সংখ্যা/৭পৌষ,১৩৮৯--পৃঃ ৪৤কোলকাতা৤
১৭৤দাস, ভূপেশ--১৯৭৮ --বানানে একরূপতা--মুদ্রণপত্র--বাংলা মুদ্রণের দুইশত বছর পূর্তি  উপলক্ষে প্রকাশিত সংকলন--পৃঃ ২৫-৩৩৤ কোলকাতা৤
১৮৤বন্দ্যোপাধ্যায়, অসিতকুমার--[১৯৭৯]--বাংলা বানানের নিয়ম--কোলকাতা৤কোলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়৤
১৯৤বসু, দ্বিজেন্দ্রনাথ-- ১৯৭৫ --বাংলাভাষার আধুনিক তত্ত্ব ও ইতিকথা(প্রথম অংশ) [প্রথম প্রকাশ]--কোলকাতা৤ পুথিপত্র৤
২০৤মিত্র, মনোজকুমার--১৯৭৬ -- বাংলা বর্ণ তুলনাংক --সাহিত্য ও সংস্কৃতি৤ জানুয়ারি-মার্চ, ১৯৭৬, ১১বর্ষ, ৪র্থ সংখ্যা৤ পৃঃ ৪১৭-৪২২৤কোলকাতা৤(এই তথ্যের ভিত্তিতে বাংলা বানানের ভুলের আশঙ্কাটি নির্ধারণ করা হয়েছে৤)
২১৤মিত্র, মনোজকুমার-- বাংলা ইঞ্জিনিয়ারিং বর্ণমালা-- সম্পাদক, মদন মিত্র--আজকাল(দৈনিক সংবাদপত্র)--২১-০২-১৯৮৪--পৃঃ ৪, কোলকাতা৤
২২৤  ঐ -- বাংলা স্বরবর্ণের সজ্জা--সম্পাদক, মদন মিত্র--আজকাল(দৈনিক সংবাদপত্র)--০৪-১২-১৯৮৪
-- পৃঃ ৬, কোলকাতা৤
২৩৤  ঐ --চিঠি(বাংলা বানান সংস্কার বিষয়ক প্রস্তাব)--আজকাল--(দৈনিক সংবাদপত্র)-- ০৯-০৪-১৯৮৪, পৃঃ ৪, কোলকাতা৤
২৪৤  ঐ -- চিঠি (এা লিপি বিষয়ক)-- চতুরঙ্গ-- সম্পাদক, আবদুর রউফ, অক্টোবর, ১৯৮৭-- পৃঃ ৫৬৩-৪, কোলকাতা৤
২৫৤মিত্র, মনোজকুমার-- বাংলা যুক্তবর্ণের প্রকৃতি নির্ধারণ--দেশ --সম্পাদক,সাগরময় ঘোষ--০১-০৮-১৯৮৭
--পৃঃ ৩২-৩৩, কোলকাতা৤
২৬৤    -- চিঠি (যুক্তবর্ণের গঠন ইত্যাদি সম্পর্কিত)-- দেশ-- ৩১-১২-১৯৮৮৤ কোলকাতা৤
২৭৤  ঐ -- চিঠি (বানান সংস্কার বিষয়ক)--দৈনিক বসুমতী--২৮-০৪-১৯৮৩;১৬-০৭-১৯৮৩;০৩-১০-১৯৮৩, কোলকাতা৤
২৮৤  ঐ -- বাংলা ব্যঞ্জনবর্ণের সজ্জা-- প্রমা-- সম্পাদক, সুরজিৎ ঘোষ-- জানুঃ-মার্চ, ১৯৮৬--পৃঃ ৯-২১, কোলকাতা৤
২৯৤    -- (ঐ বিষয়ক চিঠি)-- প্রমা--এপ্রিল-জুন, ১৯৮৬--পৃঃ ১২৪-১২৬৤কোলকাতা৤ 



বাংলা নতুন-বানান -৬৪


৩০৤মিত্র, মনোজকুমার--বাংলা ইঞ্জিনিয়ারিং বর্ণমালা-- প্রসঙ্গ : বাংলাভাষা (গ্রন্থ)--পশ্চিমবঙ্গ বাংলা আকাদেমি, ১৯৮৬--পৃঃ ৪৬-৫০, কোলকাতা৤
৩১৤  ঐ -- বাংলাভাষায় বক্র-আ -- ভাষা(পত্রিকা)--সম্পাদক, মৃণাল নাথ-- মে-অক্টোঃ, ১৯৮৩--পৃঃ ৪৯-৫৪, কোলকাতা৤
৩২৤  ঐ -- চিঠি(বানান সংস্কার বিষয়ক)--যুগান্তর-- ১০-০৮-১৯৮৫;২২-০৬-১৯৮৮;০১-০৮-১৯৮৮, কোলকাতা৤
৩৩৤ ঐ  -- বাংলাভাষা সংস্কারে বাধা কোথায়? (নিবন্ধ)--সত্যযুগ (দৈনিক সংবাদপত্র)--সম্পাদক, জীবনলাল বন্দ্যোপাধ্যায়--৩০-১২-১৯৮৪--পৃঃ ৫ এবং ৭, কোলকাতা৤
৩৪৤  ঐ -- চিঠি (ঐ বিষয়ক )-- ০৮-০১-১৯৮৫--সত্যযুগ৤কোলকাতা৤
৩৫৤    -- অ-বর্ণের জন্য নতুন প্রতীক প্রয়োজন-- সমকালীন(সাময়িক পত্র)-- ডিসেম্বর, ১৯৭৭-- সম্পাদক, আনন্দগোপাল সেনগুপ্ত--কোলকাতা৤
৩৬৤মিত্র, মনোজকুমার--বাংলা ইঞ্জিনিয়ারিং বর্ণমালা-- সারস্বত(সাময়িক পত্র)--সম্পাদক, অমিয়কুমার ভট্টাচার্য, জুলাই-সেপ্টেম্বর, ১৯৭৫, পৃঃ ১৪৬-১৫৩, কোলকাতা৤
৩৭৤  ঐ -- বাংলাভাষায় ”এ্যা“ ধ্বনি-- সাহিত্য ও সংস্কৃতি--সম্পাদক, সঞ্জীবকুমার বসু--জুলাই-সেপ্টেঃ, ১৯৭৭, কোলকাতা৤
৩৮৤মজুমদার, পরেশচন্দ্র-- আগস্ট, ১৯৮২-- বাঙলা বানান বিধি(প্রথম প্রকাশ)-- কোলকাতা-- সারস্বত লাইব্রেরি৤
৩৯৤মিয়া, মহম্মদ শাহজাহান-- বাংলা পাণ্ডুলিপি পাঠসমীক্ষা(প্রথম প্রকাশ)-- ফেব্রুয়ারি, ১৯৮৪ -- বাংলা একাডেমী, ঢাকা৤
৪০৤রহমান, মুহম্মদ হাবিবুর-- ডিসেম্বর, ১৯৭৪ --যথাশব্দ(প্রথম প্রকাশ)-- ঢাকা৤ বাংলা একাডেমী, ঢাকা৤ 

৪১৤রায়, যোগেশচন্দ্র বিদ্যানিধি-- ১৯৫৬(১৩৬৩)-- কি লিখি? (প্রথম সংস্করণ)-- কোলকাতা -- ওরিয়েন্ট বুক কোম্পানি৤
৪২৤রায়, সত্যশায়ক--বাংলাভাষার মাধ্যমে উচ্চ শিক্ষা:সমস্যা ও প্রতিকার-- সম্পাদক, অনিল বিশ্বাস-- গণশক্তি-- ১৫-১০-১৯৮৮--পৃঃ৪--কোলকাতা৤
৪৩৤সরকার, পবিত্র--রবীন্দ্রনাথ ও বাংলা ভাষাতত্ত্ব-- সম্পাদক, স্বপ্না দেব, প্রতিক্ষণ, সংস্কৃতি সংখ্যা, ১৩৯৩(মে, ১৯৮৬), কোলকাতা৤
৪৪৤    -- স্বরসংগতি, অপিনিহিতি, অভিশ্রুতি, অপশ্রুতি নামকরণ বর্জনের পক্ষে একটি প্রস্তাব-- সম্পাদক, মৃণাল নাথ-- ভাষা-- নভেম্বের, ১৯৮৩-এপ্রিল, ১৯৮৪-- পৃঃ ৪৮ -- কোলকাতা৤
৪৫৤সেন, সুকুমার-- বাংলাভাষার ব্যাকরণ কেমনটি হওয়া উচিত-- সম্পাদক, ধীরেন্দ্র দেবনাথ-- রবীন্দ্রভারতী পত্রিকা-- অক্টোঃ-ডিসেম্বর, ১৯৭৮ --কোলকাতা৤
৪৬৤”সৈনিক“ পত্রিকার ”বাংলাভাষা সংস্কার“ সিদ্ধান্ত -- ৯জুলাই, ১৯৫০--ঢাকা, বাংলাদেশ৤ (প্রতিলিপি-- বাংলা একাডেমী--ঢাকা, প্রকাশিত ’ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস : কয়েকটি দলিল‘ -- প্রথম প্রকাশ, ফেব্রুয়ারি, ১৯৮৩, পৃঃ৪৮)
   হিন্দি
৪৭৤বর্মা, রামচন্দ্র(প্রধান সম্পাদক)-- ২০১৯বি  প্রথম সংস্করণ-- মানক হিন্দি কোশ(প্রথম সংস্করণ)-- প্রয়াগ৤ হিন্দি সাহিত্য সম্মেলন-- প্রয়াগ, ভারত৤
৪৮৤শুক্ল, রামশঙ্কর(সম্পাদক)--১৯৭৫-- ভাষা-শব্দ-কোষ(সপ্তম সংস্করণ)-- এলাহাবাদ(ভারত)৤ প্রকাশক-- রামনারায়ণ লাল বেণী প্রসাদ৤


বাংলা নতুন-বানান -৬৫

   সংস্কৃত
৪৯৤Williams, Sir Monier Monier--1986-- A Sanskrit-English Dictionary(Reprinted by M/S Motilal   Banarsidass-- of first edition published by Oxford University  Press,1899)-- Delhi-- Motilal   Banarsidass.


কৃতজ্ঞতা

অধ্যাপক ডঃ তপন ঘোষাল এবং তৎকালীন (১৯৮২) গবেষক (ডঃ) শ্রীসমর ভট্টাচার্য-- যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ(কন্ট্রোল সিসটেম সেকশন, মাইক্রো কম্পিউটার ল্যাবরেটরি, ইলেকট্রিক্যালইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ), কোলকাতা৤


------------  ০০  ------------



মনোজকুমার দ. গিরিশ
(মনোজকুমার দীনেশচন্দ্র গিরিশ)

৯১/২, ডাঃ গিরীন্দ্রশেখর বসু রোড, মণীশ পার্ক, কোলকাতা-- ৭০০ ০৩৯
মোঃ-- ৯০৫১ ৫৩০৮ ১৬




হরফ যোজনা: ২৯/০১/২০০৩-- ০৬/০৪/২০০৩
সংশোধন -- ২৪/০৬/২০০৪, ২২/০৮/২০০৪, ৩০/০৮/২০০৪, ০৮/০৯/২০০৪, ০৩/১১/২০০৪, ১৮/০২/২০০৫, ৩১/০৩/২০০৫, ০৫/০৪/২০০৫, ২৭/০৪/২০০৫, ২০/০৬/২০০৬, ৩০/০৬/২০০৬, ২৩/১০/২০০৬,২৮/১২/২০০৯, 
২৯/১২/২০০৯




অহনলিপি-বাংলা ইউনিকোড ফন্টে হরফযোজনা ও বর্তমান সংশোধন ও সম্পাদনা করে ”বাংলামগ্ন“ ব্লগে পুনরায় আপলোড করা হল৤
  ০৮/০৩/২০১৩


সর্বশেষ পরিমার্জন ১৪/১০/২০১৮ 


সূচনায় নন-ইউনিকোড ফন্ট তৈরি, এবং বারে বারে ফন্টের সম্মার্জন ও সংশোধন, 
এবং পরে ইউনিকোড ফন্ট তৈরি, ও বারে বারে সম্মার্জন ও সংশোধন,
একাধিক বার কিবোর্ড তৈরি এবং সম্মার্জন ও সংশোধন ইত্যাদি কারণে হরফ সংযোজনে অলক্ষে
অবশ্যই অনেক ভুল থেকে গেছে৤ কারণ একই জিনিস বার বার কম্পোজ করতে হয়েছে৤


অনধিকারীর এই চেষ্টায় 
চিন্তার অনেক খামতিও অবশ্যই আছে৤ 


সুধী পাঠকেরা সেগুলি নির্দেশ করলে কৃতজ্ঞ থাকব৤


তবে বাংলা বানান সরল না করলে অগ্রগতি ব্যাহত হবে৤



বাংলা নতুন-বানান  → → পৃষ্ঠা--৬৬  চতুর্থ অংশ


পরবর্তী  
 
চতুর্থ অংশ দেখুন: --


http://banglamagna.blogspot.in/2014/08/blog-post.html











No comments:

Post a Comment